1. md.zihadrana@gmail.com : admin :
মাস্টার ফিডের শেয়ার নিয়ে হরিলুট - দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ

৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । দুপুর ১:০৫ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।

সংবাদ শিরোনামঃ
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থীর বাড়িতে বোমা হামলা সুপ্রীম কোর্টে কজলিস্টে অভিনব জালিয়াতি হায়ার ইন্সপায়ারিং বাংলাদেশ ইন্ডিপেন্ডেন্স রান ২০২৪ এর সাথে দৌড় মেঘনা উপজেলা প্রেসক্লাব’র পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন খাদ্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ও এম এস এর পণ্য চুরির অভিযোগ সুপ্রিম কোর্টের রায় উপেক্ষা করে কালবে চেয়ারম্যান পদে আগস্টিন পিউরিফিকেশন! জাফলং ট্যুরিস্ট পুলিশ কেবলই মুগ্ধতা ছড়ায় বাংলাদেশ সিভিল রাইটস্ সোসাইটির পানি ও স্যালাইন বিতরণ বিপ্লব, রশিদ, মুসা এবং হাসান কিভাবে ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাত অব্যাহত রেখেছে? গাইবান্ধা সদরে হত্যার উদ্দেশ্যে যুবককে ছুড়িকাঘাত,গৃহবধুর শ্লীলতাহানি
মাস্টার ফিডের শেয়ার নিয়ে হরিলুট

মাস্টার ফিডের শেয়ার নিয়ে হরিলুট

 

স্টাফ রিপোর্টার:
অন্যের শেয়ার না দিয়ে হরিলুট চালাচ্ছে এ যেন এক মগের মুল্লুকে পরিনত হয়েছে। শেয়ারবাজারে এসএমই সেক্টরে তালিকাভুক্ত মাস্টার ফিড এগ্রোটেকের ১৫ লাখ ৩৫ হাজার ৭০৮টি শেয়ার বিক্রয়ের মোট ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা প্রতিষ্ঠানটির সাবেক পরিচালক রফিকুল আলমের স্ত্রী উম্মে হাবিবা ইয়াসমিনকে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ফার্স্ট ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা (সিইও) মো. কাউসার আল মামুনের বিরুদ্ধে। ফার্স্ট ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী উম্মে হাবিবা ইয়াসমিন এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন(বিএসইসি) লিখিত অভিযোগ করেছেন।

কমিশনে উম্মে হাবিবা অভিযোগ দেওয়ার ৪ দিন আগে ফার্স্ট ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা (সিইও) মো. কাউসার আল মামুনও করেছেন ভিন্ন অভিযোগ। তার মতে, মাস্টার ফিডের কোটি টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। পরবর্তীতে আমাদের হিসাব বিভাগের তদারকিতে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সময় ধরা পড়েছে। পরবর্তীতে তারা (চক্র) বাঁচতে বিভিন্ন অজুহাতের আশ্রয় নিয়েছে। তাদের অর্থ লুটের কৌশল বিষয়টি গত ১৬ জুলাই মতিঝিল থানায় একটি জিডি করা হয়েছিল। পরে জিডি ও অর্থ লুটের বিষয়টি জানিয়ে গত ২০ জুলাই বিএসইসি কাছে অভিযোগ করেছি। একই বিষয়টি ডিএসইকেও জানিয়েছি। বিএসইসির নির্দেশে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ইতিমেধ্যে একটি পরিদর্শন টিম গঠন করেছে। ডিএসই তদন্ত টিমের প্রতিবেদনের আলোকে কমিশন এবিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এ প্রসঙ্গে বিএসইসির মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বিনিয়োগকারী উম্মে হাবিবা ইয়াসমিনের অর্থ না পাওয়া ও তার সাথে অশোভন আচরনের বিরুদ্ধে বিএসইসিতে অভিযোগ এসেছে। অভিযোগ কমিশন (বিএসইসি) দেখছে। এর আগে ২০ জুলাই ফার্স্ট ক্যাপিটালের অর্থ একটি চক্র কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে এমন একটি অভিযোগ কমিশনে এসেছিল। এটিও কমিশন দেখছে। হুট করে কোন সিন্ধান্ত নেওয়া যাবে না। তথ্য যাচাই বাছাই করতে হবে। এরপর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে কমিশন।

ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, ফার্স্ট ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা (সিইও) মো. কাউসার আল মামুনের বিরুদ্ধে এক বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রয়ের অর্থ না পাওয়ার অভিযোগে করেছে। অপরদিকে এর কয়েকদিন আগে সিইও মো. কাউসার আল মামুন তার হাউজ থেকে কৌশলে অর্থ লুট করছে একটি চক্র বিষয়টি ডিএসইকে জানিয়েছিল। দুটি অভিযোগ আমরা আমলে নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে পারব।

মাস্টার ফিডের সাবেক পরিচালক রফিকুল আলমের স্ত্রী উম্মে হাবিবা ইয়াসমিন বলেন, আমার সঙ্গে অশোভন আচরন করেছে কাওসার আল মামুন। শেয়ার বিক্রয়ের তার প্রাপ্ত অর্থ ফিরে পেতে ও অশোভন আচরনের বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার বিএসইসির চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দিয়েছি। একই অভিযোগ পত্র ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছেন তিনি।

উম্মে হাবিবা ইয়াসমিন বলেন, ফার্স্ট ক্যাপিটালের সিইও মো. কাউসার আল মামুন অনুমোদনের মাধ্যমে ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ শেয়ার বিক্রয় করার কথা।

পরে শুনা যায়, ১৫ লাখ ৩৫ হাজার ৭০৮ শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা হাউসটির সিইও উত্তোলন করেন। কিন্তু পরে অজ্ঞাত কারনে সিইও আমার পরিচয় নিয়ে অহেতুক বিভিন্ন রকম অজুহাত তৈরি করে। নানা অজুহাতে আমার টাকা না দিয়ে অন্যভাবে হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। একই সঙ্গে সিকিউরিটিজ হাউজটির ওই কর্মকর্তা আমার সাথে অশোভন আচরন করেন। পরে হতাশা নিয়ে শেয়ার বিক্রয়ের অর্থ না পেয়ে আমি হাউজটি থেকে বের হয়ে আসি।

ফার্স্ট ক্যাপিটালের সিইও মো. কাউসার আল মামুন বলেন, একটি চক্র উম্মে হাবিবা নামের এক নারীকে রফিকুল আলমের স্ত্রী বানিয়ে তার মোট শেয়ারের ২৫ শতাংশ হাতিয়ে নিয়েছেন। সেসব শেয়ার থেকে ১৫ লাখ ৩৫ হাজার ৭০৮ শেয়ার বিক্রয় করে তিন দফায় ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা টাকা সাউর্থইস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে তুলে নিয়েছেন তারা। দ্বিতীয় ধাপে ২ লাখ ২৬ হাজার ৭৯২টি শেয়ার বিক্রয় করে ৫৯ লাখ ৭৭ হাজার ১২৭ টাকা পায়তারা করছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপে অর্থ ছাড়ের বিষয়টি আমাদের হিসাব বিভাগের কর্মকর্তাদের নজরে এসেছে। যাচাই বাছাইয়ের পর তারা আমাকে জানায় বিষয়টি। পরে উম্মে হাবিবা হাউজে আসলে তার কাছে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র চাই। কিন্তু উম্মে হাবিবার দেওয়া কাগজে পত্রে অনেক অসংঙ্গতি ও ভুল পাওয়া যায়। সেসব বিষয়ে জানতে চাইলে দ্রুত ফার্স্ট ক্যাপিটাল থেকে বের হয়ে যায়।

২৪ জুলাই বিএসইসি চেয়ারম্যানের কাছে বিনিয়োগকারী উম্মে হাবিবা ইয়াসমিন চিঠিতে বলেন, গত বছরের ১৫ জুলাই আমার স্বামী (মাস্টার ফিডের সাবেক পরিচালক) মৃত্যুবরণ করেন। ফলে আদালতের রায়ে উত্তরাধিকার সার্টিফিকেট অনুযায়ী স্বামীর মোট শেয়ারের ২৫ শতাংশ বা ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৫০০টি শেয়ার পান তিনি। যা নিজের নামে নিতে ফার্স্ট ক্যাপিটেল সিকিউরিটিজের মতিঝিল শাখায় একটি বিও অ্যাকাউন্ট হিসাব খুলেন। যার বিও আইডি নং ১২০৪৪৩০০৭৫৮৭৪৯৪৯। পরবর্তীতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এর অনুমোদনক্রমে সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড এর মাধ্যমে ওই বিও হিসাবে শেয়ার স্থানান্তর করা হয়। এরপরে পর্যায়ক্রমে শেয়ার বিক্রি করে ও বিভিন্ন তারিখে ফার্স্ট ক্যাপিটালের সিইও মো. কাউসার আল মামুনের অনুমোদনের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করেন উম্মে হাবিবা। এক্ষেত্রে গত ১৪ মে থেকে ১৮ মে পর্যন্ত সময়ে ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা উত্তোলন করেন তিনি। কিন্তু এরপরে অজ্ঞাত কারনে সিইও কাউসার উম্মে হাবিবার পরিচয় নিয়ে অহেতুক বিভিন্ন রকম অজুহাত তৈরি করে টাকা প্রদানে বিলম্ব করার মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করেছেন উম্মে হাবিবা।

এর ধারাবাহিকতায় উম্মে হাবিবা গত ১৭ জুলাই তার বাবা, পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দেওয়া মো. আবুল বাসার এবং মাস্টার ফিডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কবীর হোসেনকে নিয়ে ফার্স্ট ক্যাপিটালে যান। শেয়ার বিক্রয়ের টাকা প্রদান করতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণ জানতে চাইলে মো. কাউসার আল মামুন তাদের সবার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। কাউসার আল মামুন ওইসময় উম্মে হাবিবার পরিচয় নিয়ে বারবার সন্দেহ করেন বলে চিঠিতে জানানো হয়েছে। এমনকি তিনি বলেন, আপনি উম্মে হাবিবা ইয়াসমিন না এবং আপনার সাথের ব্যক্তি আপনার পিতা নন, এগুলো সব সাজানো নাটক। তখন তাকে প্রমাণ হিসেবে সব কাগজ প্রদান করে মিলিয়ে দেখতে বলেন উম্মে হাবিবা। কিন্তু মো. কাউসার আল মামুন কোন ভাবেই প্রমান করতে রাজী হননি এবং অপমানজনক ও কুরুচিপূর্ণ ভাষা ব্যবহারের মাধ্যমে হেনস্থা করেন।

অপরদিকে ২০ জুলাই কাউসার আল মামুন দেওয়া অভিযোগে বিএসইসিকে বলেন, উম্মে হাবিবা ইয়াসমিন আমার অফিসে বেনিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্টধারী বিনিয়োগকারী। চলতি বছরের ৫ মার্চ মাস্টার ফিড এগ্রোটেকের বিও থেকে উম্মে হাবিবা ইয়াসমিনের বিও অ্যাকাউন্টে ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৫০০টি শেয়ার জমা হয়। এর প্রায় এক মাস পর গত ৪ মে থেকে ২৩ মে এসময়ের মধ্যে ১৫ লাখ ৩৫ হাজার ৭০৮টি শেয়ার বিক্রি করে। অর্থাৎ শেয়ার বিক্রি করে তিন দফায় ১ কোটি ১৮ লাখ তুলে নেন। বাকি শেয়ার বর্তমানে বিও হিসাবে সংরক্ষিত আছে। পরপর বড় বড় অংকের টাকা উত্তোলন করায় বিষয়টি আমার নজরে আসায় সিএএমএলসিও হিসাবে আমি বিও অ্যাকাউন্টের সকল তথ্য যাচাই করতে শুরু করি।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2021
ভাষা পরিবর্তন করুন »